প্রকাশিত: ০৯ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৩৪ (সোমবার)
বিয়ের আগে উৎকণ্ঠা সামলানোর উপায়

বিয়ের দিন জীবনের অন্যতম আনন্দঘন মুহূর্ত হওয়ার কথা। কিন্তু এর ঠিক আগের সময়টুকু অনেকের জন্য হয়ে উঠতে পারে প্রচণ্ড চাপ ও দুশ্চিন্তার উৎস।

দিন যত ঘনিয়ে আসে, ততই মনে হতে পারে চাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে— সিদ্ধান্তের পাহাড়, আত্মীয়-স্বজনের নানা চাওয়া-পাওয়া, ব্যয়ের চাপ এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ— সব মিলিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া স্বাভাবিক।

বিশেষ করে নারীরা, যারা পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও সমাজের প্রত্যাশা পূরণের অতিরিক্ত চাপে থাকেন, তাদের জন্য বিয়ের সময় মানসিক চাপ আরও বেড়ে যায়।

তবে মনে রাখা জরুরি— এই দুশ্চিন্তা মানে সঙ্গীর সঙ্গে কোনো সমস্যা নয়। বরং এটি প্রমাণ করে যে আপনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং চান সব কিছু সুন্দরভাবে হোক।

বিয়ের আগে উদ্বেগের সাধারণ কারণ — ডা. ক্রিস মসুনিক, মার্কিন মনোবিজ্ঞানী 

সম্ভাব্য সমস্যার ভয়
অনুষ্ঠানের দিনে বৃষ্টি পড়া, কোনো আত্মীয়ের অপ্রত্যাশিত আচরণ— এসব ভাবনা স্বাভাবিক। তবে মনে রাখতে হবে, ছোটখাটো সমস্যা হতেই পারে, তবুও দিনটি বিশেষ হয়ে থাকবে।

অতিরিক্ত নিখুঁত হওয়ার চাপ
সাজসজ্জা, নিমন্ত্রণপত্র, খাবার— সবকিছু শতভাগ নিখুঁত করতে চাওয়া উদ্বেগ বাড়ায়। অথচ আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে নতুন জীবনের সূচনা।

খরচের চিন্তা
বিয়ে ব্যয়বহুল। ভবিষ্যতের আর্থিক দায়িত্ব নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন হন। তাই বাজেট নির্ধারণ এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দেওয়া জরুরি।

পারিবারিক টানাপোড়েন
আত্মীয়রা একত্র হলে পুরনো মতভেদ মাথাচাড়া দিতে পারে। তাই আগেভাগেই সঙ্গীর সঙ্গে পরিকল্পনা করা ভালো— যদি কিছু ঘটে, কীভাবে সামলানো হবে।

জীবন পরিবর্তনের ভয়
বিয়ের পর নতুন ভূমিকা, দায়িত্ব ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একা থাকার স্বাধীনতা ছেড়ে দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ অনেকের জন্য মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় ও মনোযোগ দরকার। আর মনে রাখতে হবে— উদ্বেগ থাকা মানে আপনি বিয়ের জন্য অনুপযুক্ত নন।

উদ্বেগ কমানোর উপায়

গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের চর্চা
ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস নিন, কয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে মুখ দিয়ে ছাড়ুন। জেয় শেটির মতে, এটি হৃদস্পন্দন কমিয়ে মনকে শান্ত করে।

পরিকল্পনায় শৃঙ্খলা আনা
করণীয় তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ঠিক করুন। এতে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে এবং অপ্রয়োজনীয় দুশ্চিন্তা কমবে।

কাজ ভাগ করে দেওয়া
সব কাজ একা না করে বিয়ের পরিকল্পক, বন্ধু বা পরিবারের সহায়তা নিন। এতে চাপ কমবে এবং প্রস্তুতির সময়টা উপভোগ্য হবে।

ইতিবাচক দিকগুলোতে মনোযোগ দেওয়া
নেতিবাচক ভাবনা এলে মনে করিয়ে দিন— এই দিনটি আপনার ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে নতুন জীবনের সূচনা। আনন্দকে প্রাধান্য দিন, ত্রুটিকে নয়।

নিজেকে সময় দেওয়া
হাঁটতে বের হওয়া, পছন্দের বই পড়া, প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো— এসব মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, বলেন তামারা লেভিট।

খোলাখুলি কথা বলা
সঙ্গী, বন্ধু বা পরিবারের কারও সঙ্গে নিজের অনুভূতি ভাগ করুন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। অনুভূতি প্রকাশ মানসিক চাপ কমায়।