প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৯:৪৬ (সোমবার)
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ একটি যুগান্তকারী ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্সের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই ঘোষণাটি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে বলেন, "মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান (Two-State Solution) অপরিহার্য। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সেই সমাধানের দিকে একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ।" তিনি আরও বলেন, "এটি শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থন নয়, বরং ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই ইসরায়েলের পাশে শান্তিতে সহাবস্থান করতে পারে।"

মাখোঁর এই ঘোষণার ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে সমর্থন আরও জোরদার হয়েছে। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, বিশ্ব নেতারা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সমর্থনে একযোগে কাজ করার জন্য একটি শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হচ্ছেন। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্য, কানাডা,লুক্সেমবার্গ  এবং অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা এই আন্দোলনের গতি বাড়িয়েছে। আল জাজিরা.রয়টার্স.আনাদোলু এজেন্সি থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক গণমাধ্যমগুলোও এই খবরটি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে, যেখানে ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাখোঁ তার ভাষণে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান লড়াই এবং ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, "ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ এই নয় যে আমরা সন্ত্রাসবাদের প্রতি সহনশীল। শান্তি আলোচনার মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
এই ঘোষণার পর, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং তাদের সমর্থকরা এটিকে একটি ঐতিহাসিক বিজয় হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে, এই সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে। ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোকে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করতে পারে, যা ফিলিস্তিনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পথ আরও সুগম করবে।