সুহেল আহম্মেদ বাপ্পি :
প্যারিসের প্রবাসী সমাজে এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা শুধু নিজেদের ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্যই নয়, বরং সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার জন্যও চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম এক অনন্য নাম সাত্তার আলী সুমন শাহ আলম — ইউরোপের স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান শাহ গ্রুপ-এর কর্ণধার, সফল উদ্যোক্তা, এবং সর্বোপরি অদম্য ক্রিকেটপ্রেমী।
হাজারো কাজের ব্যস্ততা, আন্তর্জাতিক ব্যবসার চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব—সব কিছুর মাঝেও শাহ আলম ভাইয়ের হৃদয়ের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা জুড়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ও সংস্কৃতি। তাঁর কাছে ব্যবসায়িক চুক্তি কিংবা মুনাফা সাময়িক বিষয়, কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচ কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি কখনোই আপস করেন না। ইউরোপে যখনই বাংলাদেশি ক্রিকেট বা সংস্কৃতির প্রসার নিয়ে কথা ওঠে, তখনই সবার আগে উচ্চারিত হয় শাহ আলম ভাইয়ের নাম।
"ক্রিকেট মানে আনন্দ, সংস্কৃতি মানে পরিচয়" — এই বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সবসময় চেষ্টা করেন যেন কোনো অনুষ্ঠানেই ত্রুটি না থাকে। প্রয়োজন হলে ব্যবসায়িক জরুরি কাজ থামিয়ে দিয়েও তিনি পৌঁছে যান মাঠে কিংবা মঞ্চে, শুধু নিশ্চিত করতে যে আনন্দ-উৎসব সফলভাবে শেষ হয়।
তাঁর এই নিরলস প্রচেষ্টায় এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী তাঁর সহধর্মিনী ফাতেমা বেগম মরিয়ম। সমাজে যখন অনেক স্ত্রী শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সাফল্যের অংশীদার হন, সেখানে মরিয়ম আপা ব্যতিক্রম — সমান তালে স্বামীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকেন, উৎসাহ দেন, সমর্থন জোগান। তাঁদের এই দাম্পত্য সহযোগিতা ক্রিকেট ও সংস্কৃতির প্রচারে এক অনন্য উদাহরণ।
শাহ আলম ভাইকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল—"আপনার এই ক্রিকেটপ্রেম ও সাংস্কৃতিক অনুরাগের আসল রহস্য কী?"
হাসিমুখে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন—
"যখন দেশে রাজনৈতিক হানাহানি, খুনাখুনি, অশান্তি চলে, তখন প্রবাসী কিংবা দেশের মানুষ সবাই দুশ্চিন্তায় থাকে। যদি ক্রিকেট কিংবা সংস্কৃতির মাধ্যমে অন্তত কিছু মুহূর্তের জন্য মানুষকে হাসি ও আনন্দ দিতে পারি, সেটাই আমার শান্তি।"
দেশের যেকোনো নেতিবাচক খবরে তিনি মন খারাপ করেন, আবার ভালো খবর পেলে উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠেন। তাঁর এই মানবিকতা, দেশপ্রেম এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিরলস অবদান তাঁকে প্রবাসী সমাজে এক আলোকিত ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
আজ প্যারিস থেকে ইউরোপের যেকোনো প্রান্তে, যেখানে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ক্রিকেটের আলো পৌঁছায়—সেখানে শাহ আলম ভাইয়ের অবদান নিঃসন্দেহে অন্যতম প্রেরণার উৎস।
তিনি শুধু একজন ব্যবসায়ী নন—তিনি সংস্কৃতি ও খেলাধুলার এক অক্লান্ত যোদ্ধা।
লেখক : ক্রীড়া সংগঠক।
লেখালেখি থেকে আরো পড়ুন